সহবাস কাকে বলে? সহবাস কেন করতে হয়?

Last Updated on by Rosmoy

যৌনতার অর্থ একেক জনের কাছে একেক রকম হয়ে থাকে। সর্বোপরি, এটি একটি স্বাস্থ্যকর এবং প্রাকৃতিক কার্যকলাপ। এটি এমন এক জিনিষ যা বেশিরভাগ লোকেরা উপভোগ করে এবং অর্থপূর্ণ বলে মনে করে।

সহবাস মানব জীবনের একটি কেন্দ্রীয় অংশ। এটি নিজেকে প্রকাশ করার একটি স্বাভাবিক এবং ইতিবাচক উপায়। সহবাসের সঙ্গে কেবল যৌনতা নয়, অন্যান্য বিষয়ও জড়িত থাকে, উদাহরণস্বরূপঃ সহবাসের আনন্দ ও অর্গাজম, এবং সন্তান জন্মদান।

যাই হোক না কেন, সমস্ত যৌন ক্রিয়াকলাপ আরামদায়ক, উপভোগ্য এবং সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের সম্মতিতে হওয়া উচিত। জোরজবরদস্তি করে সহবাস হয় না, এবং করাও উচিত না।

সহবাস হলো দুজন মানুষের যৌনসঙ্গম বা মিলন। আমারা অনেকেই জানিনা সহবাস কি বা কিভাবে করতে হয়, এই লেখাতে আমরা জানবো সহবাস কাকে বলে, এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে দেরী না করে চলুন জেনে নেই।

এমন তথ্যবহুল লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন এখানেঃ ফেসবুক পেইজ

সহবাস কি?

যৌনতা এমন একটি ক্রিয়াকলাপ যেখানে এক, দুই বা ততোধিক লোক শব্দ বা স্পর্শ ব্যবহার করে নিজেদের এবং/অথবা একে অপরকে জাগিয়ে তোলে।

আরো সহজ করে বললে, সহবাস হলো একে অপরের ভিতরে অনুপ্রবেশ। সহবাসের সবচেয়ে পরিচিত শব্দ বা রুপ হচ্ছে “সেক্স” যা আমরা কমবেশি সবাই কোন না কোন সময়ে শুনেছি।

সহবাস করতে দুজন মানুষের প্রয়োজন হয়ে থাকে, তবে কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের সুখ নিজে নিজেই উপভোগ করা যায়, যাকে আমরা হস্তমৈথুন হিসাবে চিনি।

সহবাস_সহবাস কাকে বলে
সহবাস

সহবাস কাকে বলে?

সহবাসের সবচেয়ে সাধারণ সংজ্ঞা হলো অনুপ্রবেশ, যেখানে দুজন মানুষ অন্তরঙ্গভাবে দুজনের সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে ফোরপ্লে, আলিঙ্গন, চুম্বন, লেহন, মর্ধন, এবং যৌনাঙ্গে অনুপ্রবেশ। বিয়ের পর সাধারণত আমরা সহবাসে লিপ্ত হয়ে থাকি, তাছাড়া অনেকে বিয়ের আগেই প্রেমিক প্রেমিকার সাথে সহবাস করে থাকেন। কেউ কেউ পতিতালয়ে গিয়েও সহবাস করে থাকেন।

একটি যৌন ক্রিয়ায় বা সহবাসে যোনি বা যৌনতা ছাড়াও অনেক কিছু জড়িত থাকতে পারে এবং যোনি যৌনতা একেবারেই অন্তর্ভুক্ত নাও হতে পারে। যেসব জিনিষ করলে যৌন অনুভূতি জাগে, যেমন আলিঙ্গন, চুম্বন, স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ, মলদ্বার সহবাস, মৌখিক যৌনতা, কারও সামনে কাপড় খুলে ফেলা ইত্যাদি সহবাসে জড়িত থাকে।

যাইহোক, সংজ্ঞা অনুসারে সহবাস বা সেক্স হচ্ছে একে অপরের ভিতরে প্রবেশ, যাকে সহজভাবে সহবাস বলে।

প্রকৃতিতে সহবাস_সহবাস কাকে বলে
প্রকৃতিতে সহবাস

যৌন কার্যকলাপ বলতে কী বোঝায়?

যৌন ক্রিয়াকলাপ এমন কোনও ক্রিয়াকলাপ যা জড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা যৌন অনুভূতি হিসাবে হিসাবে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে নিম্নলিখিত ক্রিয়াকলাপ এবং আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেঃ

  • যোনিপথে সহবাস 
  • পায়ূপথে সহবাস 
  • গভীর আলিঙ্গন 
  • চুম্বন 
  • কোন যৌন স্পর্শ
  • মুখে সহবাস
  • নিজের শরীরকে অন্য ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে 
  • অন্য ব্যক্তির অশ্লীল ছবি তুলে
মুখে সহবাস_সহবাস কাকে বলে
মুখে সহবাস

সহবাস কেন করতে হয়?

সহবাস বা যৌনমিলন মানুষের জীবনের একটি প্রাকৃতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদা পূরণের মাধ্যম নয়, বরং এটি সম্পর্কের মজবুত ভিত গড়ে তোলে এবং দাম্পত্য জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।

১. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি

সহবাসে শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। এর মধ্যে “অক্সিটোসিন” নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিকভাবে স্বস্তি দেয় এবং সঙ্গীর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করে। এছাড়াও, সহবাসের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং মানসিক চাপ কমে যায়।

২. সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি

সহবাস দাম্পত্য জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সঙ্গীর সাথে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করে। শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাস আরো মজবুত হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো সমাজে, যেখানে পরিবার এবং সম্পর্কের গুরুত্ব খুবই বেশি, সেখানে সহবাস সম্পর্কের স্থায়িত্ব এবং আন্তরিকতার জন্য অপরিহার্য।

৩. প্রজনন ক্ষমতা

সহবাস প্রজননের একটি প্রধান মাধ্যম। এটি নতুন প্রজন্মের জন্ম দেওয়ার জন্য অপরিহার্য। যেহেতু বাংলাদেশে পরিবার প্রথা এবং সন্তান গ্রহণ একটি সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই সহবাসের মাধ্যমে পরিবার বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

৪. যৌন চাহিদা পূরণ

প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটি স্বাভাবিক যৌন চাহিদা থাকে। সহবাস এই চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। যৌন চাহিদা যদি সঠিকভাবে পূরণ না হয়, তাহলে তা মানসিক অস্বস্তি এবং সম্পর্কের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। তাই, সহবাস একটি স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া যা এই চাহিদাগুলোকে পূরণ করতে সহায়ক।

৫. সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ

বাংলাদেশের সামাজিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সহবাস একটি বৈধ প্রক্রিয়া, যা বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ইসলাম ধর্মে সহবাসকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এটি একটি পবিত্র সম্পর্ক হিসেবে সম্মানিত।

৬. শারীরিক সুস্থতা

সহবাস শারীরিক ফিটনেস এবং সুস্থতার জন্য উপকারী। এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং পেশী গঠনে সহায়তা করে। নিয়মিত সহবাস শরীরকে সতেজ রাখে এবং হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও, এটি শরীরের ক্যালোরি বার্ন করার একটি উপায় হিসেবে কাজ করে।

৭. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি

সহবাসে অংশগ্রহণের মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস এবং সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে। এটি শরীর এবং মনের মধ্যে একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করে, যা জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।

রিলেটেডঃ স্বামীকে কিভাবে আদর করতে হয়? স্বামীকে বিছানায় খুশি করার উপায়

পরিশেষে

সহবাস শুধুমাত্র শারীরিক মিলন নয়, এটি সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করার একটি মাধ্যম। এটি শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকারী।

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে পরিবার এবং সম্পর্কের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি, সেখানে সহবাস দাম্পত্য জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এ বিষয়ে সঠিক ধারণা এবং জ্ঞান থাকা প্রতিটি বিবাহিত দম্পতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা সুখী এবং সুস্থ দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারেন।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের লেখা সহবাস কি, সহবাস কেন করতে হয়? এবং সহবাস কাকে বলে তা নিয়ে বিস্তারিত। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না, আজকের মতো এখানেই বিদায়, দেখা হবে আগামী লেখাতে।

About The Author

Leave a Comment