প্রবাসী স্বামী এবং স্ত্রীর সম্পর্ককে সুখী এবং মধুর রাখতে প্রয়োজন গভীর বোঝাপড়া, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, এবং ভালোবাসা। প্রবাসে স্বামী কাজ করতে গেলে তাদের মন খারাপ হওয়া এবং দূরে থাকার কারণে মানসিক চাপ পড়ে। তবে, স্ত্রীর কিছু কৌশল অবলম্বন করলে এই দূরত্ব কাটিয়ে সম্পর্ককে আরও মজবুত করা যায়। এখানে ৭টি কার্যকরী উপায় আলোচনা করা হলো, যা প্রবাসী স্বামীকে খুশি করতে সহায়ক হতে পারে।
প্রবাসী স্বামীকে খুশি করার উপায়
প্রবাসী স্বামীকে খুশি রাখতে বাংলাদেশি স্ত্রীরা অনেক কিছুই করতে পারেন, তার মধ্যে উলেখ্যযোগ্য হলো নিয়মতো যোগাযোগ রাখা, ভিবিন্ন উৎসব, অনুষ্ঠানে রোমান্টিক বার্তা পাঠানো, ভিডিও চ্যাট করা, ভালো উপহার পাঠানো এছাড়াও যেসব বিষয়ের মাধ্যমে দূরের মানুষকে খুশি করবেন তা নিচে দেওয়া হলো।
১. নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখা
প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির সাহায্যে আজকাল দূরত্ব দূর করা সম্ভব হয়েছে। ফোন কল, ভিডিও কল, মেসেজিং অ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিদিন যোগাযোগ করলে সম্পর্কটি আরও গভীর হয়। প্রতিদিনের ছোটখাটো ঘটনাগুলি, যেমন কী রান্না করা হলো, বাচ্চাদের স্কুলের গল্প, অথবা আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলো শেয়ার করলে স্বামী মনে করবেন যে তিনি পরিবারের সঙ্গে আছেন। এতে তার মন ভালো থাকবে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়বে।
২. পছন্দের খাবার পাঠানো
যেকোনো বাঙালি পুরুষের মন জয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তার পছন্দের খাবার। প্রবাসে থাকার সময় অনেক সময় প্রিয় খাবারের স্বাদ মিস করেন প্রবাসীরা। আপনার স্বামীর পছন্দের কিছু খাবার যদি পাঠানোর সুযোগ থাকে, তাহলে তা অবশ্যই পাঠান। ঘরের তৈরি খাবার, যেমন পিঠা, মিষ্টি, বা যে কোনো বিশেষ বাঙালি রান্না প্রবাসী স্বামীর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে। এই ছোট্ট কাজের মাধ্যমে আপনি তার প্রতি আপনার যত্ন এবং ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন।
৩. উপহার পাঠানো
উপহারের মাধম্যে সম্পর্ককে আরও রঙিন করা যায়। প্রবাসে থাকা স্বামীর জন্য কিছু ছোটখাটো উপহার পাঠানো যেতে পারে। এটি হতে পারে একটি সুন্দর পোশাক, প্রিয় বই, বা তার পছন্দের কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট। প্রিয়জনের কাছ থেকে আসা যেকোনো উপহার প্রবাসে থাকা স্বামীর মন ভালো করতে সাহায্য করে। এছাড়া, কিছু নির্দিষ্ট দিনে যেমন বিবাহ বার্ষিকী বা তার জন্মদিনে এই ধরনের সারপ্রাইজ দেওয়া গেলে সম্পর্ক আরও মধুর হবে।
৪. পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সম্মান বজায় রাখা
স্বামীর প্রবাসে থাকার সময় পারস্পরিক বিশ্বাস বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস এবং সম্মান একটি সম্পর্কের মূল স্তম্ভ। আপনার স্বামী দূরে থাকলেও তাকে সবসময় বিশ্বাস করা উচিত। সম্পর্কের মধ্যে যদি কোনো সন্দেহের বীজ বোনা হয়, তাহলে সম্পর্কটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নিজের মধ্যে ধৈর্য ধারণ করা, তার প্রতি আস্থা রাখা এবং তাকে মানসিকভাবে সহায়তা করার মাধ্যমে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।
৫. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করা
আপনার স্বামী যখন প্রবাসে থাকে, তখন তার পরিবারের জন্য মন কাঁদতে পারে। পরিবার এবং বাচ্চাদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোর ছবি বা ভিডিও শেয়ার করলে তার মন ভালো থাকবে। পরিবারের প্রতিদিনের ছোটখাটো মুহূর্তগুলো তাকে শেয়ার করলে তিনি মনে করবেন যে তিনি পরিবারের সঙ্গে আছেন। এতে তার মন ভারমুক্ত হবে এবং প্রবাসে থাকার কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।
৬. প্রয়োজনীয় দায়িত্বগুলো নেওয়া
স্বামী প্রবাসে থাকার সময় পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয় স্ত্রীকে। এ সময় স্ত্রীর উচিত পরিবারের সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করা। যেমন, সন্তানদের পড়াশোনা, পরিবারের খরচ, এবং অন্য সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা। এতে প্রবাসে থাকা স্বামী চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন এবং তার কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে পারবেন। স্ত্রীর এই দায়িত্বশীলতা সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তোলে।
৭. সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা এবং যত্ন প্রকাশ করা
প্রবাসী স্বামীকে খুশি রাখার অন্যতম উপায় হলো তাকে ভালোবাসা এবং যত্ন প্রদর্শন করা। অনেক সময় কথার চেয়ে কাজের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করা আরও বেশি কার্যকর হয়। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে তার প্রতি আপনার যত্ন এবং ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তাকে বলুন যে আপনি তাকে কতটা মিস করছেন এবং তার জন্য আপনার অনুভূতি কতটা গভীর। প্রবাসে থাকা স্বামী যখন বুঝতে পারবেন যে তার স্ত্রী তাকে কতটা ভালোবাসে, তখন তার মনও ভালো থাকবে।
উপসংহার
প্রবাসী স্বামীকে খুশি রাখার জন্য এসব উপায় অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান, এবং ভালোবাসা বজায় রেখে সম্পর্ককে মজবুত করা সম্ভব। প্রবাসে থাকা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর এই যত্ন এবং ভালোবাসা তাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে এবং জীবনের সকল বাধা পেরিয়ে সম্পর্ককে সাফল্যমণ্ডিত করবে।